ইঞ্জিনিয়ারিং নাকি মেডিকেল,কোনটার কোচিং করবো??
ছোট বেলা থেকে বাবা মা আত্মীয় স্বজন জানতে চায় তুমি বড় হয়ে কি হতে চাও। আমরাও বলে থাকি আমি অমুক হবো তমুক হবো।কিন্তু বাস্তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যেটা হয় সেটা হল ভাড়ে মা ভবানী। সেটা বড় কথা নয় আসল কথায় আসা যাক।
নামকরণ দেখে মনে হতে পারে মেডিকল ও ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিপক্ষ, কিন্তু না। আমাদের বলার উদ্দেশ্য হল তোমাদের জন্য কোনটা ভাল সেটা যাতে তোমরা নিজেরা বুঝত পারো। তাই আমাদের এই পোস্ট। এখানে মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং তুলে ধরা হলো।
প্রথমত, তোমার নিজের যে বিষয়টা লক্ষ্য রাখতে হবে সেটা হল, তুমি কোন সাবজেক্টটা ভাল পারো, ভালো বুঝো।সেই কথা বিবেচনায় এনে তোমার লক্ষ্য স্থির করতে হবে। কারণ তুমি যদি সকল বিষয় খুবই ভাল বুঝো এবং খুবই ভাল পারো তাহলে তুমি যে মাল্ট্রি ট্যালেন্টেড এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এই রকম হাজারে এক দুইটা। তাই তুমি কি সেটা তুমিই ভাল জানো ।
দ্বিতীয়ত, তোমাদের অনেকের ধারণা তুমি গাছেরটাও খাবে, তলার টাও কুড়াবে। মানে তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং কোচিং করবে আবার মেডিকেলের জন্যও পড়বে। তোমাদের জন্য বাণী হলো, ভাই যেন কোনো এক দিকে নজর দাও। দুই নৌকায় পা দিলে একটাও পায়ের তলায় থাকবে না। দিন শেষে পানিতে হাবুডুবু খেতে হবে। মানে কোথায় চান্স না পেয়ে ঘরে বসে থাকতে হবে।( ধরে নিলাম তুমি মাল্ট্রি ট্যালেন্টেড না। সেই প্রেক্ষিতে কথা গুলো বলা)
তৃতীয়ত, তুমি কিভাবে বুঝবে তোমার জন্য মেডিকেল কোচিং করা ভাল। দেখো, মেডিকেলে বেশির ভাগ প্রশ্ন আসে জীববিজ্ঞান ও রসায়ন থেকে। তাই তুমি যদি জীববিজ্ঞান ও রসায়ন ভাল পারো, বেসিক ভাল থাকে, পড়া ভাল মনে থাকে, খুঁটিনাটি সব ভাল পারো, পড়তে ভাল লাগে, তবেই তুমি বুঝবে তুমি মেডিকেল কোচিং করলে ভাল করতে পারবে।
ঠিক তেমনই ইঞ্জিনিয়ারিং। তোমার যদি ম্যাথ ভাল লাগে, ভাল পারো, পদার্থের কঠিন ম্যাথও তোমার কাছে সহজ মনে হয়, রসায়ন ভাল পারো, যতই করো ততই ভাল লাগে তখন বুঝবে তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং কোচিং করলে ভাল করতে পারবে ।
চতুর্থত, তোমার পরিবাবের ইচ্ছা তুমি মেডিকেল পড়ো কিন্তু তোমার মেডিকেল ভাল লাগে না তখন তুমি কোনটা বেছে নিবে?
দেখো,পরিবার বলো আর আত্মীয় স্বজন বলো সবাই চায় তাদের চাওয়া। তোমার উচিত হবে সেই দিকটা বেছে নেয়া যেটা তুমি ভালবাসো এবং ভাল পারো। ভাল করতে হলে বিষয়টাকে ভালবাসা জরুরী। শুধু ভালবাসলেও হবে না ভাল পারতে হবে।
★ভাইয়া আমি যদি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে না পারি তবে কি হবে আমার? আমার জীবন কি বৃথা?
কে বলছে তোমার জীবন বৃথা? ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার না হতে পারলে কখনই মনে করো না তোমার জীবন বৃথা। পাবলিক হোক বা বেসরকারি যেখানেই পড়ো না কেন, আর যে সাবজেক্টেই পড়ো না কেন সেই জায়গা থেকেও তুমি যেথষ্ট এবং যথেষ্ট ভাল করা সম্ভব যদি তোমার চেষ্টা থাকে। মনে রেখ চেষ্টা কখনও বৃথা যায় না। আর ধরো তুমি পিওর সাবজেক্টে পড়ো(যদিও তোমরা এটাকে পাত্তা দেও না) আমি বলব তুমি পারবে জীবনে সফল হতে। একটা কথা কি তুমি কিসে পড়ছো এটা বড় কথা নয়, তুমি কি করছো এটাই বড় কথা। কারণ দিনশেষে এই একটা জিনিসই সবাই দ্যাখে।
পরিশেষে বলি তুমি ডাক্তার হও বা ইঞ্জিনিয়ার বা অন্য কিছু যেটাই হও না কেন ভাই দেশ, মা, মানুষের সেবা করার চেষ্টা করো।সব কিছুর উধ্বে তুমি একজন ভাল মানুষ হওয়ার চেষ্টা করো। কারণ সবাই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে সবাই ভাল মানুষ হতে পারে না। দেশের জন্য ভাল কিছু করার ব্রত নিয়ে বেছে নিও তোমার পেশা। তাহলেই তুমি হতে পারবে আসল মানুষ নতুবা তোমার এই বড় বড় ডিগ্রীর কোনো মূল্য থাকবে না। তোমাদের আগামী হোক উজ্জ্বল ও সুখময়। তোমাদের জন্য দোয়া রইল।
লিখেছেনঃঅাহমেদ ইশতিয়াক মৃদুল (বায়োকেমিস্ট্রি,জাবি)