ব্যক্তিত্ব বিকাশের ৮টি মূলমন্ত্র ।
প্রায়শই আমরা কারো মধ্যে একটু গাম্ভীর্য দেখলেই বলি -তার মধ্যে ব্যক্তিত্ব আছে, আবার কেউ অনেক উচ্ছ্বসিত হলে বলি তার ব্যক্তিত্ব নেই। আসলে কারো মধ্যে ব্যক্তিত্ব আছে আর কারো মধ্যে ব্যক্তিত্ব নেই, এই কথাটি ঠিক নয়।
প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যেই ব্যক্তিত্ব উপস্থিত, সেটি কেবলমাত্র ব্যক্তিভেদে আলাদা হয়। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় ব্যক্তিত্ব হচ্ছে কোনো একজনের মানসিক প্রক্রিয়া ও আচরণের এমন এক স্বতন্ত্র ধরন, যা কেবল তার মধ্যেই বিদ্যমান থাকবে যেটি কিনা অন্যদের কাছ থেকে সেই ব্যক্তিকে আলাদা করবে। তবে এই ব্যক্তিত্ব সব সময় যেন অন্য মানুষের মনে পজিটিভ চিন্তার সৃষ্টি হয় সেটায় সকলের কাম্য থাকে। প্রতিটা ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা উচিৎ।
অাজ অাপনাদের এমন ৬টি কৌশলের কথা বলব যা অাপনার ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়তা করবে।
১। সুন্দর বাচনভঙ্গিতে কথা বলা
যেকোনো ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব প্রকাশের প্রধান মাধ্যম হলো তার বাচন ভঙ্গি।সুন্দর বাচনভঙ্গির মাধ্যমেই আপনার ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠবে সবচেয়ে বেশি। তাই ব্যক্তিত্ববান হতে চাইলে সবার আগে সুন্দর বাচনভঙ্গির দিকে সকলের মনোযোগ দেয়া উচিত। বয়সের সাথে আপনার কথা বলার ভঙ্গি ঠিক রাখতে হবে । সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলা, স্পষ্ট উচ্চারণ, কথা বলার সময় চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা এবং ভাবপ্রকাশের দিকে লক্ষ্য রাখলেই আপনার ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠবে সবচেয়ে বেশি।
২। অপরের প্রসংশা করা
আপনি যখন অন্যের কাজের ঠিকভাবে প্রসংশা করবেন তখন তার মনের ভিতরও অাপনার সম্পর্কে ভালো ধারণা জন্ম নেবে।এতে অাপনার ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটবে।তবে কখনোই খারাপ কাজের প্রসংশা করা যাবেনা।এতে আপনার ব্যক্তিত্বের খারাপ দিকটা প্রকাশ পাবে।
৩। ঠিক পোশাক নির্বাচন
কথায় অাছে,অাগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী।অর্থাৎ অাপনাকে দেখেই যেন অাপনার সম্পর্কে কেও খারাপ মন্তব্য করতে না পারে সে জন্য অাপনার পোষাকের দিকে অাপনাকে নজর দিতে হবে।অাপনার বয়সের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অাপনাকে পোষাক পরতে হবে।স্থান,সময়,পরিবেশের সাথেও অাপনার তাল মেলাতে হবে।তাহলেই অাপনার ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটবে।
৪। কথা ও কাজের মিল রাখা
অাপনি যখন অাপনার কথা ও কাজের মধ্যে মিল রাখতে পারবেন তখন সকলের কাছে অাপনার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।অার অাপনার গ্রহণযোগ্যতাই হলো অাপনার ব্যক্তিত্বের বিকাশ।তাছাড়া কথা ও কাজের মধ্য মিল থাকলে অাপনি সকলের বিশ্বাসী হতে পারবেন।এটা একটি মানবগুণ।
৫। অপ্রয়োজনীয় কথা না বলা
প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বলা কেওই পছন্দ করে না।অাপনি যখন অপ্রয়োজনীয় কথা বেশি বলবেন তখন অাপনি অন্যদের অপছন্দের তালিকায় চলে যাবেন।সকলে অাপনার প্রতি বিরক্ত প্রকাশ করবে। যা অাপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশে বড় বাঁধার সৃষ্টি হবে।এই কারণে অাপনার অপ্রয়োজনীয় কথা বলার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
৬। সামাজিকতা পালন
অাপনি যখন সামাজিকতা পালনের মাধ্যমে সমাজের সকলের সাথে মিশবেন তখন সমাজের সকলের সাথে অাপনার একটা যোগসূত্র তৈরী হবে। সকলের সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি হবে।অার এর ফলে অাপনি অাপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশের সুযোগ পাবেন। কিন্ত যে সামাজিকতা পালন করে না সে সমাজেও মিশতে পারেনা। ফলে তার ব্যক্তিত্বেরও বিকাশ ঘটে না।
পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার ১০টি কৌশল
৭। ইতিবাচক মনোভাব
যেকোনো কাজে যখন অাপনার মনোভাব ইতিবাচক থাকতে হবে।তাহলে অাপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।অার সফলতা ব্যক্তিত্ব বিকাশের অন্যতম মাধ্যম।
৮। লক্ষ্য ঠিক রাখা
প্রায় সময় মানুষ অবাস্তবিক এবং অপারক গোল সেট করে এবং কিছু দূর গিয়ে তারা হতাশ হয়ে যায় যা আত্মবিশ্বাসকে ধ্বংস করে দেয়। তাই প্রথমে ছোট ছোট গোল সেট করুন যা আপনি সফল করতে পারবেন। এমন লক্ষ্য ঠিক করুন যা আপনি অর্জন করতে পারবেন। লক্ষ্য অর্জনের পর একটু থামুন এবং ভেবে দেখুন আপনি কতটুকু অর্জন করতে পারলেন। নিজের সাফল্য শনাক্ত করতে পারলে তা আপনার মনোভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যা অাপনার ব্যক্তিত্ব বিকাশের অন্যতম মাধ্যম।
অাপনার ব্যক্তিত্ব অাপনার সম্পদ। অার সেটার বিকাশ অাপনাকেই করতে হবে। অাপনার ব্যক্তিত্বই অাপনার সম্মান। ধন্যবাদ