বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি

স্বপ্ন যখন বুয়েট ক্যাম্পাস !

সবাই স্বপ্ন দেখে কেউ স্বপ্ন দেখে BUET এর কেউ দেখে DMC অথবা DU এর ৷ প্রাই সবাই চাই ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হতে ৷ কারো স্বপ্ন পুরণ হয় কারো হয় না ৷ স্বপ্ন আসলে সবার পুরণ হবে এটাও বাস্তবে সম্ভব নয় ৷ ছেট বেলা থেকেই বাবা মা বলে আমার ছেলে ডাক্তার হবে ,আমার ছেলে ইন্জিনিয়ার হবে ৷ কিন্তু শেষে কি দেখা যায়!

অনেকটা দঃখ জনক কথা বলে ফেলেছি এবার আসল কথায় আসা যাক কিভাবে নিজের স্বপ্ন কে বাস্তবে রুপ দেওয়া যাবে ?

স্বপ্ন যখন বুয়েটএই স্বপ্নটা সত্য করতে হলে তোমাকে কিছু বিষয়ের ওপর লক্ষ্য রাখতে হবে।

তোমার করনীয়:

  • আমার প্রথম কথা হল হতাশা ত্যাগ করতে হবে ৷
    হতাশ থাকার কারনে অনেক কিছুই হারিয়ে যায় জীবন থেকে কিন্তু আমরা তা বুঝি না ৷
  • কেমন ধরনের হতাশা 

আচ্ছা আমরা কি ভাবি না যে বুয়েটে চান্স পাওয়া কি এত সোজা ৷ওটা ভাল স্টুডেন্টের কারখানা ,আমার দ্বারা হবে না ৷ওখানে কত স্টুডেন্ট পরীক্ষা দিবে কিন্তু নিবে মাত্র 1050 জন আমার দ্বারা হবে না ৷ ইত্যাদি ইত্যাদি আসলে এই ভাবনা গুলি আমাদের শেষে বলে পড়ালেখা দিয়ে কি হবে তোর দ্বারা হবে না ৷
এসব ত্যাগ করতে হবে ৷

  • কোচিং সমস্যা

 আর কোচিং টাইমে অনেকের কোচিং নিয়ে মাথা ব্যাথা থাকে অনেকে ভাবে ঐ কোচিং এ পড়ে আমার মনে হয় ভাল হত ৷ এই ভাবনা বাদ দিতে হবে ৷ কারন বুয়েট তো আর কোচিং দেখে নিবে না ৷ বুয়েট তোমার মেধা দেখে নিবে ৷ আর মেধা তোমার একান্ত নিজস্ব ৷ 2 বছর পড়ার পর HSC দিবে ৷ আর মাত্র 3/4 মাস কেচিং করে অ্যাডমিশন দিবে ৷ কথা হল এই তিন মাসে কি 2 বছরের সব ক্লিয়ার করা সম্ভব! তাই এই 2 বছরের পড়াটাই সব ৷ কোচিং তোমাকে শুধু পথ দেখিয়ে দিবে ৷ বড় ভায়েরা কেচিং এ দেখাবে কি করে স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে হয় তা ছাড়া আর কিছু নয় ৷
আমি নিজে ইন্জিনিয়ারিং এর জন্য কোন কোচিং করি নাই ৷ তার পরও বুয়েটে চান্স হয়েছে ৷ তাই ইন্জিনিয়ারিং কোচিং এ কি হয় তা নিয়ে আমার বেশি কিছু জানা নেই ৷ তবে কোচিং করা লাগে এটা একটা নিয়মের মধ্যে পড়ে গেছে ৷

  • উদ্দেশ্যহীন পড়ালেখা

আচ্ছা আমরা অনেকে খুব পড়ালেখা করলাম তারপরো হলো না কিছুতেই এর কারন কি ? কারন পড়াটা ছিল কিন্তু কেন পড়ালেখা করছি সেটাই জানি না এই কারনে ৷ পড়ার উদ্দেশ্য কি তাও জানতে হবে ৷ উদ্দেশ্যহীন ভাবে পড়ালেখে করলে কিছুই হয় না ৷নিজে উপলব্ধি করেছি এটা আমি |

  • কত সময় পড়তে হবে

কত সময় পড়তে হবে অ্যাডমিশন টাইমে ৷ এটা সবার কমন প্রশ্ন ৷আচ্ছা তুমি ভাব একজন সাইকেলে আরেক জন বাসে করে নড়াইল থেকে যশোর এ যাচ্ছে ৷ কে আগে পৌছাবে নিশ্চই বাসে যাওয়া ব্যাক্তি ৷ কিন্তু সাইকেলে যাওয়া ব্যাক্তিও কিন্তু যশোর গিয়ে পৌছাবে এক সময় ৷তবে তার সময় বেশি লাগবে এই আর কি ৷ ঠিক তেমনি তুলনা করে সব হয় না ৷
তোমার নিজেকে বুঝতে হবে ঠিক কত সময় দিলে তুমি পারবে ৷

  • হতাশার অন্য রূপ

স্কুল কলেজে পেছনে পড়ে থাকা এটা নিয়ে অনেকে চিন্তিত থাকি ৷ সব কিছু করার পরও ভাবি এটা বোধ হয় ঐ প্রথম সারির জন্য আমার জন্য নয় ৷এটা ত্যাগ করতে হবে ৷

  • কনফিডেন্স

কনফিডকনফিডেন্স থাকা ভাল কিন্তু অভার কনফিডেন্স ভাল না ৷ হ্যা আমার দ্বারা এটা হতে হতে পারে ৷ এটা হল কনফিডেন্ট ৷ এটা না থাকলে হবে না ৷
আমার হবে নাতো কার হবে ৷ এটা অভার কনফিডেন্ট ৷ এটা না থাকাই ভাল ৷
কারন তোমার থেকে কেই না কেউ উপরে আছেই ৷এটা তোমাকে ধ্বংসও করে দিতে পারে।

  •   ডাক্তার vs ইঞ্জিনিয়ার

 দুই নৌকাতে পা না দেওয়া ভাল ৷ যেমন ধর ইঞ্জিনিয়ার আবার ডাক্তার দুই টাই হতে চাও ৷ দুই কোচিং এক সাথে চালাচ্ছ ৷ এতে করে তোমার দুই স্বপ্ন মাটি হবার সম্ভবনা আছে ৷বেশিরভাগ ক্ষেত্রই এমন হয়।পরে দেখা যায় নরমাল ভার্সিটিও কপালে নেই। তবে অনেকেই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার দুটোই হবার সুযোগ পাই ৷তবে তাদের সংখ্যা খুব কম ৷

  •   ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে

 মনে রাখতে না পারা এটা সব সময় যে খারাপ তা নয় ৷ যে মনে রাখতে কম পারে বাস্তবে দেখ সে অংক ভাল পারে ৷ এটা হয়ত তাকে ইঞ্জিনিয়ারিং এর দিকে ডেকে নিতে চাই ৷ কিন্তু জোর করে আমরা ডাক্তারি তে যেতে চাই ৷ কিন্তু পারি না যেতে ৷
অাবার, মা বাবা বলে বাবা তুমি ডাক্তার হও ৷ মামা বলে তুমি ইঞ্জিনিয়ার হও ৷
পাশের বাসা থেকে বলবে তুমি এত ভাল পার তাহলে ইঞ্জিনিয়ার কেন হবে ডাক্তার হও ৷ শেষে আমরা কি চাই এদের চাপে পড়ে সব ভুলে যাই ৷
তাই নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়াই ভাল এসব ক্ষেত্রে ৷

  • কোন বই ভালো

 কোন বই পড়লে ভাল হবে ৷ এটা একটা ব্যাপার বটেই ৷ তবে আমার মনে হয় যে বইটা 2 টা বছর পড়লাম সেটা পড়াই ভাল ৷ 2 বছর পর এটা বাদ দিয়ে ভাল লেখকের বই পড়া শুরু করলাম তখন পুরাতন বইটা রাগ করতে পারে ৷ তবে পারলে তখন ঐ লেখকের নতুন বইটা কিনে পড়া ভাল ৷
লেখক পরিবর্তন করলে বই এর ধরন পরিবর্তন হবে ৷ মাত্র 3 মাসে নতুন বই এর সাথে খাপ খাওয়ানো কঠিন ব্যাপার।

  •    বুঝে পড়তে হবে

 কোন কিছু বুঝে পড়া আর না বুঝে পড়া, দুইটাকেই আমরা পড়ার মধ্যে নিয়ে আসি ৷ না বুঝে পড়াটা আসলে পড়া না ৷ বুঝে পড়লে কম সময়ে নিজের আয়ত্তে আনা সম্ভব ৷তাই যা পড়বে অবশ্যই বুঝে পড়বে।না বুঝে পড়ে কোনোই লাভ নেই।

  •   লেখার গুরুত্ব

 পড়ার সাথে সাথে কাগজ কলম দিয়ে লেখার কাজটা করা বেশি জরুরি ৷
পড়ে মনে না থাকলেও লিখলে মনে থাকার সম্ভবনা বেশি থকে ৷
তাই লেখা বেশি করে করতে হবে।

  •   বেশি পড়ার কুফল

 যতটুকু পড়তে মন চাইবে ততো টুকুই পড়া ভাল ৷ বেশি পড়ে আতেলের খাতাই নিজের নাম না লেখানো ভাল ৷ কারন মন না থাকলে বেশি পড়ে লাভ নাই ৷

আমি যা যা বললাম এটা করলেই চান্স হয়ে যাবে এটা ভাবা নিতান্ত বোকামি ছাড়া আর কিছু না ৷ এটা শুধু দেখিয়ে দেওয়া কিছু পথ ৷
নড়াইল থেকে ঢাকা যাওয়ার যেমন অনেক পথ আছে ঠিক তেমনই স্বপ্ন বাস্তব করার অনেক পথ আছে ৷ সবটাই একান্ত নিজস্ব ব্যাপার ৷

আর একটা কাজ সব সময় করতে হবে ৷ খোদার প্রতি আস্থা রাখতে হবে ৷
এত কিছু করার পরও যদি না হয় তাহলে বুঝবে তোমার কপালে এটা নেই ৷

সবটা নিজের থেকে লেখা ৷ এটা আমার জিবনে পাওয়া কিছু ঘটনা থেকে নিয়ে লিখলাম ৷কোন ভুল ত্রুটি হলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন ৷

Hasnat Rahman
BUET-17 (CE)

প্রিয় ভিজিটর, এখানে উপস্থাপিত সকল তথ্য উপাত্ত অভিজ্ঞ লোক দ্বারা ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহিত । উল্লেখিত কোন তথ্যের ভুল যদি আপনার নিকট দৃশ্যমান হয় তবে অতিসত্ত্বর তা আমাদের ইমেইলের ([email protected]) মাধ্যমে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করছি।

Back to top button
error: কন্টেন্ট সংরক্ষিত !!