এসএসসি ভূগোল ও পরিবেশ এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১
২০২১ সালের এস এস সি ভূগোল ও পরিবেশ এসাইনমেন্ট । এসএসসি ভূগোল এসাইনমেন্ট সমাধান আমাদের ওয়েবসাইটে যুক্ত করা হয়েছে । আপনি যদি ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী হোন তাহলে এই পোষ্টটি আপনার জন্য ।
এসএসসি ভূগোল ও পরিবেশ এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট dshe.gov.bd-এ গত ১৮ জুলাই তারিখে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত এসাইনমেন্ট প্রকাশ করা হয় । নোটিশ অনুযায়ী, প্রতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক বিষয়ের উপর প্রতি সপ্তাহে ০২ টি করে ১২ সপ্তাহের জন্য মােট ২৪ টি অ্যাসাইনমেন্ট প্রণয়ন করা হবে । অর্থ্যাৎ মােট ৩২টি অ্যাসাইনমেন্ট থেকে একজন শিক্ষার্থীকে চতুর্থ বিষয় বাদ দিয়ে প্রতিটি গ্রুপভিত্তিক বিষয়ের ৮টি করে মােট ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে হবে। ঐচ্ছিক বিষয়ের জন্য কোনাে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করতে হবে না। আজকে আমরা মানবিক শাখার জন্য নির্ধারিত ভূগোল ও পরিবেশ এসাইনমেন্ট প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর দেখব ।
এস এস সি ভূগোল এসাইনমেন্ট প্রশ্ন ও উত্তর ২০২১
মানবিক শাখার শিক্ষার্থীরা তাদের বিভাগভিত্তিক বিষয় হিসেবে ভূগােল ও পরিবেশের উপর এসাইনমেন্ট জমা দিবে । প্রথম পর্যায়ের এসাইনমেন্ট মূল বইয়ের প্রথম অধ্যায় – “ভূগােল ও পরিবেশ” এবং দ্বিতীয় অধ্যায় – “মহাবিশ্ব ও আমাদের পৃথিবী” থেকে নেওয়া হয়েছে ।
এসাইনমেন্ট নং ১ ( ছবি লিংক)
ভূগােল ও পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ক প্রতিবেদন প্রণয়ন ।
উত্তর
২৭ জুলাই ২০২১
বরাবর,
অধ্যক্ষ
প্রধান শিক্ষক
———– স্কুল এ্যান্ড কলেজ
বিষয়ঃ ভূগােল ও পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ক প্রতিবেদন।
জনাব, বিনীত নিবেদন এই যে, আপনার আদেশ, যাহার স্মারক নং (আপনার স্কুলের প্রত্যেকটি শব্দের প্রথম অক্ষর নিয়ে জমাদানের তারিখ, মাস ও সাল দিয়ে স্মারক লিখবে যেমন খু.উ.বি.- ০৫/০৮/২০২১, অনুসারে “ভূগােল ও পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ক প্রতিবেদনটি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হলাে।
ভূগোলের ধারণা
আমরা পৃথিবীতে বাস করি। পৃথিবী আমাদের আবাসভূমি। মানুষের আবাসভূমি হিসেবে পৃথিবীর বর্ণনা হলাে। ভূগােল। ইংরেজি ‘Geography শব্দটি থেকে ভূগােল শব্দ এসেছে। প্রাচীন গ্রিসের ভূগােলবিদ ইরাটসথেনিস প্রথম ‘Geography শব্দ ব্যবহার করেন। Geo’ ও ‘graphy শব্দ দুটি মিলে হয়েছে। ‘Geography। Geo’ শব্দের অর্থ ‘ভূ’ বা পৃথিবী এবং ‘graphy শব্দের অর্থ বর্ণনা। সুতরাং Geography শব্দটির অর্থ পৃথিবীর বর্ণনা। পৃথিবী আবার মানুষের আবাসভূমি।
অধ্যাপক ম্যাকনি (Professor E. A. Macnee) মানুষের আবাসভূমি হিসেবে পৃথিবীর আলােচনা বা বর্ণনাকে বলেছেন ভূগােল। তার মতে ভৌত ও সামাজিক পরিবেশে মানুষের কর্মকাণ্ড ও জীবনধারা নিয়ে যে বিষয় আলােচনা করে তাই ভূগােল।
অধ্যাপক ডাডলি স্ট্যাম্পের (Professor L. Dudley Stamp) মতে, পৃথিবী ও এর অধিবাসীদের বর্ণনাই হলাে ভূগােল।
কোনাে কোনাে ভূগােলবিদ ভূগােলকে বলেছেন পৃথিবীর বিবরণ, কেউ বলেছেন পৃথিবীর বিজ্ঞান। অধ্যাপক কার্ল রিটার (Professor Carl Ritter) ভূগােলকে বলেছেন পৃথিবীর বিজ্ঞান।
ভূগােল একদিকে প্রকৃতির বিজ্ঞান আবার অন্যদিকে পরিবেশ ও সমাজের বিজ্ঞান। প্রকৃতি, পরিবেশ ও সমাজ সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান হলাে ভূগােলের আলােচ্য বিষয়। রিচার্ড হার্টশােন (Richard Hartshorne) বলেন, পৃথিবীপৃষ্ঠের পরিবর্তনশীল বৈশিষ্ট্যের যথাযথ যুক্তিসংগত ও সুবিন্যস্ত বিবরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয় হলাে ভূগােল।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির বিজ্ঞান একাডেমি ১৯৬৫ সালে ভূগােলের একটি সংজ্ঞা দিয়েছে। এর মতে, | পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপব্যবস্থাগুলাে কীভাবে সংগঠিত এবং এসব প্রাকৃতিক বিষয় বা অবয়বের | সঙ্গে মানুষ নিজেকে কীভাবে বিন্যস্ত করে তার ব্যাখ্যা খোজে ভূগােল।
আলেকজান্ডার ফন হামবােল্টের (Alexander Von Humbolt) মতে, ভূগােল হলাে প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত বিজ্ঞান, প্রকৃতিতে যা কিছু আছে তার বর্ণনা ও আলােচনা এর অন্তর্ভুক্ত।
পরিবেশের ধারণা
মানুষ যেখানেই বাস করুক তাকে ঘিরে একটি পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিরাজমান। প্রকৃতির সকল দান মিলেমিশে তৈরি হয় পরিবেশ। নদী, নালা, সাগর, মহাসাগর, পাহাড়, পর্বত, বন, জঙ্গল, ঘর, বাড়ি, রাস্তাঘাট, উদ্ভিদ, প্রাণী, পানি, মাটি ও বায়ু নিয়ে গড়ে ওঠে পরিবেশ। কোনাে জীবের চারপাশের সকল জীব ও জড় উপাদানের সর্বসমেত প্রভাব ও সংঘটিত ঘটনা হলাে ঐ জীবের পরিবেশ। পরিবেশ বিজ্ঞানী আর্মসের (Arms) মতে, জীবসম্প্রদায়ের পারিপার্শ্বিক জৈব ও প্রাকৃতিক অবস্থাকে পরিবেশ বলে।
পার্ক (C. c. Park) বলেছেন, পরিবেশ বলতে স্থান ও কালের কোনাে নির্দিষ্ট বিন্দুতে মানুষকে ঘিরে থাকা সকল অবস্থার যােগফল বােঝায়। স্থান ও কালের পরিবর্তনের সঙ্গে পরিবেশও পরিবর্তিত হয়। যেমনশুরুতে মাটি, পানি, বায়ু, উদ্ভিদ, প্রাণী নিয়ে ছিল মানুষের পরিবেশ। পরবর্তীতে এর সঙ্গে যােগ হয়েছে। মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কার্যাবলি। ফলে সৃষ্টি হয়েছে এক নতুন ধরনের পরিবেশ।
ভূগােলের পরিধি
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশ, নতুন নতুন আবিষ্কার, উদ্ভাবন, চিন্তা-ধারণার বিকাশ, সমাজের মূল্যবােধের পরিবর্তন ভূগােলের পরিধিকে অনেক বিস্তৃত করেছে। এখন নানান রকম বিষয় যেমন ভূমিরূপবিদ্যা, আবহাওয়াবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, মৃত্তিকাবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, সমাজবিদ্যা, অর্থনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি ভূগােল বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
(ক) প্রাকৃতিক ভূগােল (Physical geography) : ভূগােলের যে শাখায় ভৌত পরিবেশ ও এর মধ্যে কার্যরত বিভিন্ন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত থাকে তাকে প্রাকৃতিক ভূগােল বলে। পৃথিবীর ভূমিরূপ, এর গঠন প্রক্রিয়া, বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডল, জলবায়ু ইত্যাদি প্রাকৃতিক ভূগােলের আলােচ্য বিষয়।
- ভূমিরূপবিদ্যা (Geomorphology) : ভূমিরূপবিদগণ একটি গ্রহের নগ্নীভবন এবং ক্ষয়ীভবনের ভূমিরূপের পরিবর্তন সম্পর্কে আলােচনা করে ।
- জলবায়ুবিদ্যা (Climatology) : জলবায়ুবিদ্যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়ার ধরন এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে পৃথিবীর প্রভাব সম্পর্কে আলােচনা করে।
- জীবভূগােল (Biogeography) : পৃথিবীপৃষ্ঠের প্রাণিজগৎ এবং উদ্ভিদের বণ্টন নিয়ে জীবভূগােল আলােচনা করে।
- মৃত্তিকা ভূগােল (Soil geography) : মৃত্তিকা ভূগােলবিদগণ অশামণ্ডলের উপরিভাগের মৃত্তিকা এবং এর বণ্টন ও বিন্যাস সম্পর্কে আলােচনা করে।
- সমুদ্রবিদ্যা (Oceanography) : পৃথিবীর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ সমুদ্র। বিভিন্ন মহাদেশের মধ্যে। সমুদ্রপথে যােগাযোেগ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উত্থান, অবনমন, সমুদ্রের পানির রাসায়নিক গুণাগুণ ও লবণাক্ততা নির্ধারণ, সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা সমুদ্রবিদ্যার আলােচ্য বিষয়।
(খ) মানব ভূগােল (Human geography) : পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন পরিবেশে মানুষ কীভাবে বসবাস করছে, কীভাবে জীবনযাত্রা নির্বাহ করছে, কেন এভাবে জীবনযাত্রা নির্বাহ করছে তার কার্যকারণ অনুসন্ধান মানব ভূগােলের আলােচ্য বিষয়।
- অর্থনৈতিক ভূগােল (Economic geography) : প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ যেসব অর্থনৈতিক কাজ করে তা অর্থনৈতিক ভূগােলের আলােচ্য বিষয়। এসব কাজ হলাে কৃষিকাজ, পশুপালন, বনজ সম্পদ, খনিজ সম্পদ সংগ্রহ, ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা ইত্যাদি।
- জনসংখ্যা ভূগােল (Population geography) : জনসংখ্যা, জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি-প্রকৃতি, তার | কার্যকারণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনের উপর এর প্রভাব জনসংখ্যা ভূগােলের আলােচ্য বিষয়।
- আঞ্চলিক ভূগােল (Regional geography) : অঞ্চলভেদে পৃথিবীর ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু, উদ্ভিদ, জীবজন্তু, মানুষ ও মানুষের জীবনধারণ প্রণালি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের ভৌগােলিক বিষয়বস্তু অনুশীলন করা আঞ্চলিক ভূগােলের প্রধান বিষয়।
- রাজনৈতিক ভূগােল (Political geography) : রাজনৈতিক বিবর্তন, রাজনৈতিক বিভাগ ও পরিসীমা এবং বিভাগের মধ্যস্থিত ভৌগােলিক বিষয় রাজনৈতিক ভূগােলের প্রধান বিষয়।
- সংখ্যাতাত্ত্বিক ভূগােল (Quantitative geography) : ভূগােলের এই শাখায় সংখ্যাতাত্ত্বিক কৌশল এবং মডেল ব্যবহার করে প্রমাণাৰ্থ পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া সংখ্যাতাত্ত্বিক পদ্ধতি ভূগােলের অন্যান্য শাখায় ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কিছু ভূগােলবিদ শুধু সংখ্যাতাত্ত্বিক পদ্ধতিতে বিশেষজ্ঞ হন।
- পরিবহন ভূগােল (Transport geography) : পরিবহন ভূগােলবিদরা সরকারি, বেসরকারি, যাতায়াত ব্যবস্থা এবং মানুষ ও পণ্যের একস্থান থেকে অন্যস্থানে স্থানান্তর সম্পর্কে আলােচনা করে।
- নগর ভূগােল (Urban geography) : ভূগােলের এ শাখায় নগরের উৎপত্তি ও বিকাশ, নগর | ও শহরের শ্রেণিবিভাগ, নগর পরিবেশ, নগরের কেন্দ্রীয় এলাকা, নগরীর বস্তি ইত্যাদি বিষয় চর্চা করা হয়।
পরিবেশের উপাদান
পরিবেশের উপাদান দুই প্রকার যেমন জড় উপাদান ও জীব উপাদান। যাদের জীবন আছে, যারা খাবার খায়, যাদের বৃদ্ধি আছে, জন্ম আছে, মৃত্যু আছে তাদের বলে জীব। গাছপালা, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ, মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী হলাে জীব। এরা পরিবেশের জীব উপাদান। জীবদের নিয়ে গড়া পরিবেশ হলাে জীব পরিবেশ। মাটি, পানি, বায়ু, পাহাড়, পর্বত, নদী, সাগর, আলাে, উষ্ণতা, আর্দ্রতা হলাে পরিবেশের জড় উপাদান। এই জড় উপাদান নিয়ে গড়া পরিবেশ হলাে জড় পরিবেশ।
পরিবেশের প্রকারভেদ
পরিবেশ দুই প্রকার ভৌত বা প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সামাজিক পরিবেশ। প্রকৃতির জড় ও জীব উপাদান নিয়ে যে পরিবেশ তাকে ভৌত বা প্রাকৃতিক পরিবেশ বলে। এই পরিবেশে থাকে মাটি, পানি, বায়ু, পাহাড়, পর্বত, নদী, সাগর, আলাে, গাছপালা, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ, মানুষ ও অন্যান্য ক্ষুদ্র প্রাণী। মানুষের তৈরি পরিবেশ হলাে সামাজিক পরিবেশ। মানুষের আচারআচরণ, উৎসব-অনুষ্ঠান, রীতি-নীতি, শিক্ষা, মূল্যবােধ, অর্থনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে যে পরিবেশ গড়ে ওঠে তা হলাে সামাজিক পরিবেশ।
ভূগােল ও পরিবেশের উপাদান সমূহের আন্তঃসম্পর্ক বিশ্লেষণ
ভূগােল ও পরিবেশ একে অন্যের সাথে ওতপ্রােতভাবে জড়িত। এদের একটি ছাড়া আরেকটি কল্পনা করা
প্রায় অসম্ভব। ভূগােল হল পৃথিবীর বিজ্ঞান পৃথিবীপৃষ্ঠে সংঘটিত ব্যবস্থাগুলাে কিভাবে কাজ করছে এবং
প্রাকৃতিক বিষয় গুলাের সাথে মানুষের কি সম্পর্ক মানুষ কিভাবে তা নিজেদের সাথে মানিয়ে চলছে তার | ব্যাখ্যা অন্বেষণেই বের হয়েছে ভূগােল অন্যদিকে মানুষ যেখানে বসবাস করুক না কেন তাকে ঘিরে রয়েছে। পারিপার্শ্বিক অবস্থা আমাদের পরিবেশ পরিবেশ যেসব উপাদান দিয়ে গঠিত হয় তার যথােপযুক্ত ব্যাখ্যা এবং আলােচনা করার জন্য রয়েছে ভুগােল। সুতরাং ভূগােল ও পরিবেশ একই সূত্রে গাঁথা আর আমরা যদি ভূগােল বর্ণনা ও গবেষণা কে কাজে লাগিয়ে একটি সুন্দর কাঠামাে তৈরি করতে পারি তাহলে আমরা একটি | সুন্দর পরিবেশের পৃথিবী তৈরি করতে পারব। ভূগােল ও পরিবেশ বিষয়টি অধ্যায়নের মাধ্যমে জানা যায় –
- পৃথিবীর কোনাে স্থানের প্রকৃতি ও পরিবেশ।
- পাহাড়, পর্বত, নদী, সাগর, মালভূমি, সমভূমি ও মরুভূমি, এদের গঠনের কারণ ও বৈশিষ্ট্য।
- পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে কীভাবে জীবজগতের উদ্ভব হয়েছে সে বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত ধারণা অর্জন।
- পৃথিবীর বিভিন্ন পরিবেশের উদ্ভিদ ও প্রাণী এবং এদের আচারআচরণ, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার বৈচিত্র্য।
- কৃষি, শিল্প, ব্যবসা, বাণিজ্য, পরিবহন ও যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নতি ফলে মানুষের সামাজিক পরিবেশের কী পরিবর্তন হয়েছে।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টির কারণ, ক্ষয়ক্ষতি ও নিয়ন্ত্রণ, ভূপ্রকৃতি অবস্থান, জলবায়ুর ধরন ও যােগাযােগ ব্যবস্থার গুরুত্ব অনুযায়ী ভূি ব্যবস্থাপনা।
- পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি, গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া ও এর প্রভাব।
প্রতিবেদকের নামঃ (নিজের নাম লিখবেন)
প্রতিবেদকের ঠিকানাঃ (নিজের ঠিকানা লিখবেন)।
প্রতিবেদনের সময়ঃ সকাল ১০ টা
তারিখঃ
এসাইনমেন্ট নং ২ ( ছবি লিংক)
সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীর চারটি অবস্থায় বাংলাদেশে বিরাজমান ঋতু পরিবর্তন বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন ।
২৩ জুলাই ২০২১
বরাবর,
প্রধান শিক্ষক,
কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয় দোহার ঢাকা।
বিষয়ঃ “সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীর চারটি অবস্থায় বাংলাদেশে বিরাজমান ঋতু পরিবর্তন ” বিষয়ক একটি প্রতিবেদন।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আপনার আদেশ নং ক.প. ম. ন.৪৬৫৪৮; তারিখ- ১৮ জুলাই ২০২১ অনুসারে “সূর্যকে। পরিক্রমণকালে পৃথিবীর চারটি অবস্থায় বাংলাদেশে বিরাজমান ঋতু পরিবর্তন ” বিষয়ক একটি প্রতিবেদন নিম্নে পেশ করছি।
“সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীর চারটি অবস্থায় বাংলাদেশে বিরাজমান ঋতু পরিবর্তন “
ঋতু পরিবর্তন
তাপমাত্রার পার্থক্য অনুসারে সারাবছরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। এ প্রতিটি ভাগকে এক একটি ঋতু বলে। তাপমাত্রার পার্থক্য অনুসারে সারাবছরকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলাে হলাে- গ্রীষ্মকাল, শরৎকাল, শীতকাল ও বসন্তকাল। আমরা জানি, সমগ্র পৃথিবীকে দুটো গােলার্ধে ভাগ করা হয়েছে। নিরক্ষরেখার উপরের দিকের অংশকে উত্তর গােলার্ধ এবং নিচের দিকের অংশকে দক্ষিণ গােলার্ধ ধরা হয়। উত্তর গােলার্ধে যখন গ্রীষ্মকাল দক্ষিণ গােলার্ধে তখন শীতকাল।
ঋতু পরিবর্তনের কারণসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলােঃ
(১) পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দিবারাত্রির তারতম্যের জন্য : উত্তাপের পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে সূর্য পৃথিবীর যে গােলার্ধের নিকট অবস্থান করে তখন সেই গােলার্ধে দিন বড় এবং রাত ছােট। তার বিপরীত গােলার্ধে রাত বড়, দিন ছােট। পৃথিবী দিনের বেলায় তাপ গ্রহণ করে ফলে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয় এবং রাতের বেলায় বিকিরণ করে শীতল হয়। তখন একটি স্থানে বড় দিনে ভূপৃষ্ঠ যে তাপ গ্রহণ করে ছােট রাতে সে তাপ পুরােটা বিকিরণ করতে পারে না। ঐ স্থানে সঞ্চিত তাপের কারণে আবহাওয়া উষ্ণ হয় এবং তাতে গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়া পরিলক্ষিত হয়। বিপরীত গােলার্ধে রাত বড় এবং দিন। ছােট হওয়াতে দিনের বেলায় যে তাপ গ্রহণ করে রাতের বেলায় সব তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা অনুভূত হয় তখন শীতকাল।।
(২) পৃথিবীর গােলাকার আকৃতি : পৃথিবী গােল, তাই পৃথিবীর কোথাও সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে আবার কোথাও তির্যকভাবে পড়ে। ফলে তাপমাত্রার পার্থক্য হয় এবং ঋতু পরিবর্তিত হয়।
(৩) পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথ : পৃথিবীর আবর্তন পথ উপবৃত্তাকার তাই বছরের বিভিন্ন সময় সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব কমবেশি হয়। এতে তাপমাত্রার পার্থক্য হয়, তাই ঋতু। পরিবর্তিত হয়।
৪) পৃথিবীর কক্ষপথের কৌণিক অবস্থানঃ সূর্যকে পরিক্রমণের সময় নিজ কক্ষতলের সঙ্গে পৃথিবীর মেরুরেখা সমকোণে না থেকে ৬৬.৫° কোণে হেলে একই দিকে অবস্থান করে। এতে বছরে একবার পৃথিবীর উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু সূর্যের নিকটবর্তী হয়। যে গােলার্ধ যখন সূর্যের দিকে ঝুঁকে থাকে সে গােলার্ধে সূর্য লম্বভাবে কিরণ দেয়। তার তাপমাত্রা তখন বেশি হয় এবং দূরে গেলে তাপমাত্রা কম হয়, ফলে ঋতু পরিবর্তন ঘটে
৫) বার্ষিক গতির কারণে: পৃথিবীর বার্ষিক গতির জন্য সূর্যকিরণ বিভিন্ন স্থানে কমবেশি পড়ার কারণে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রার পার্থক্য ঘটছে। ফলে জলবায়ুর বিভিন্নতা হয়। একে ঋতু পরিবর্তন বলে।
ঋতু পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় পৃথিবীর চারটি অবস্থার চিত্র সহকারে নিম্নে উপস্থাপন করা হলােঃ
আমরা জানি, পৃথিবীতে চারটি ঋতু-গ্রীষ্মকাল, শরৎকাল, শীতকাল ও বসন্তকাল। আমরা এখন দেখব ঋতু কীভাবে পরিবর্তিত হয়। সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীর চারটি অবস্থা থেকে ঋতু পরিবর্তনের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।
উত্তর গােলার্ধে গ্রীষ্মকাল ও দক্ষিণ গােলার্ধে শীতকাল
২১এ মার্চের পর থেকে পৃথিবী তার নিজ কক্ষপথে এগিয়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর মেরু ক্রমশ সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। এর সঙ্গে সঙ্গে যত দিন যায় তত উত্তর মেরুতে আলােকিত অংশ বাড়তে থাকে। এভাবে ২১এ জুনে গিয়ে সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দিতে থাকে। ফলে ২১এ জুন উত্তর গােলার্ধে বড় দিন এবং ছােট রাত হয়। ঐ দিনই সূর্যের উত্তরায়ণের শেষ এবং তার পরের দিন থেকে পুনরায় সূর্য দক্ষিণ দিকে আসতে থাকে। দিন বড় হওয়ার কারণে উত্তর গােলার্ধে ২১ এ জুনের দেড় মাস পূর্ব থেকেই গ্রীষ্মকাল শুরু হয় এবং পরের দেড় মাস পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল স্থায়ী হয়।
উত্তর গােলার্ধে গ্রীষ্মকাল ও দক্ষিণ গােলার্ধে শীতকাল
এই সময়ে দক্ষিণ গােলার্ধে ঠিক বিপরীত অবস্থা দেখা যায় অর্থাৎ শীতকাল অনুভূত হয়। এ সময় সূর্য হেলে থাকার কারণে এ গােলার্ধে সূর্য কম সময় ধরে কিরণ দেয়। ফলে দিন ছােট এবং রাত বড় হয়। দিনে ভূপৃষ্ঠ যতটুকু উত্তপ্ত হয়, রাতে তাপ বিকিরণের ফলে তা ঠান্ডা হয়ে যায়। এখানে তখন শীতের আবহাওয়া বিরাজ করে। দক্ষিণ গােলার্ধে এ সময়কে শীতকাল বলে (চিত্র ১)।
উত্তর গােলার্ধে শরৎকাল ও দক্ষিণ গােলার্ধে বসন্তকাল
২১ এ জুন থেকে দক্ষিণ মেরু সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। উত্তর গােলার্ধের অংশগুলাে কম কিরণ পেতে থাকে এবং দক্ষিণ । গােলার্ধের অংশগুলাে বেশি সূর্যকিরণ পেতে থাকে। এভাবে ২৩ সেপ্টেম্বর সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। তাই এ সময় পৃথিবীর সর্বত্র দিন ও রাত্রি সমান হয়। দিনের বেলায় যে তাপ আসে রাত সমান হওয়ায় একই পরিমাণ তাপ বিকিরিত হওয়ার সুযােগ পায়।
উত্তর গােলার্ধে শীতকাল ও দক্ষিণ গােলার্ধে গ্রীষ্মকাল
২৩ সেপ্টেম্বরের পর দক্ষিণ গােলার্ধ ক্রমশ সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। এই সময় দক্ষিণ গােলার্ধ সূর্যের কাছে আসতে থাকে। উত্তর গােলার্ধ দূরে সরতে থাকে। ফলে দক্ষিণ গােলার্ধে সূর্য। লম্বভাবে এবং উত্তর গােলার্ধে কোণ করে কিরণ দিতে থাকে। এতে উত্তর গােলার্ধে দিন ছােট ও দক্ষিণ গােলার্ধে দিন বড় এবং রাত ছােট হতে থাকে। এর মধ্যে ২২ এ ডিসেম্বর সূর্য। মকরক্রান্তির উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। সেই দিন উত্তর গােলার্ধে ছােট দিন ও বড় রাত হওয়াতে শীতকাল।
উত্তর গােলার্ধে বসন্তকাল ও দক্ষিণ গােলার্ধে শরৎকাল
পৃথিবী তার কক্ষপথে চলতে চলতে ২২এ ডিসেম্বরের পর থেকে | ২১এ মার্চ পর্যন্ত এমন স্থানে ফিরে আসে যখন সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দিতে থাকে। ফলে ২১এ মার্চ পৃথিবীর সর্বত্র দিনরাত্রি সমান হয়। দিনের বেলায় সূর্যকিরণের কারণে | ভূপৃষ্ঠের বায়ুস্তর গরম হয় এবং রাত্রিবেলায় বিকিরিত হয়ে | ঠান্ডা হয়। এই সময় উত্তর গােলার্ধে বসন্তকাল ও দক্ষিণ | গােলার্ধে শরৎকাল। ২১এ মার্চ পৃথিবীর সর্বত্র দিনরাত্রি সমান হয় এবং ঐ দিনটিকে বাসন্ত বিষুব বা মহাবিষুব বলে (চিত্র ২)।
সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীর চারটি অবস্থায় বাংলাদেশে বিরাজমান ঋতু পরিবর্তনের ব্যাখ্যা
বাংলাদেশ পৃথিবীর উত্তর গােলার্ধে অবস্থিত।
বাংলাদেশের গ্রীষ্মকাল
২১এ মার্চের পর থেকে পৃথিবী তার নিজ কক্ষপথে এগিয়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর মেরু ক্রমশ সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। এর সঙ্গে সঙ্গে যত দিন যায় তত উত্তর মেরুতে আলােকিত অংশ বাড়তে থাকে। এভাবে ২১এ জুনে গিয়ে সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দিতে থাকে। ফলে ২১এ জুন। উত্তর গােলার্ধে বড় দিন এবং ছােট রাত হয়। ঐ দিনই সূর্যের উত্তরায়ণের শেষ এবং তার পরের দিন থেকে পুন দক্ষিণ দিকে আসতে থাকে। দিন বড় হওয়ার ক
ত্তর গােলার্ধে তথা বাংলাদেশে ২১এ জুনের দেড় মাস পূর্ব থেকেই গ্রীষ্মকাল শুরু হয় এবং পরের দেড় মাস পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল স্থায়ী হয়।
বাংলাদেশে শরৎকাল
২১ এ জুন থেকে দক্ষিণ মেরু সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। উত্তর গােলার্ধের অংশগুলাে কম কিরণ পেতে থাকে এবং দক্ষিণ গােলার্ধের অংশগুলাে বেশি সূর্যকিরণ পেতে থাকে। এভাবে ২৩ সেপ্টেম্বর সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। তাই এ সময় পৃথিবীর সর্বত্র দিন ও রাত্রি সমান হয়। ২৩ এ সেপ্টেম্বরের দেড় মাস আগে থেকেই উত্তর গােলার্ধে অর্থাৎ বাংলাদেশে। শরৎকালের সূচনা হয় এবং দেড় মাস পর পর্যন্ত এই শরৎকাল। স্থায়ী থাকে।
বাংলাদেশে শীতকাল
২৩ সেপ্টেম্বরের পর দক্ষিণ গােলার্ধ ক্রমশ সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। এই সময় দক্ষিণ গােলার্ধ সূর্যের কাছে আসতে থাকে। উত্তর গােলার্ধ দূরে সরতে থাকে। ফলে দক্ষিণ গােলার্ধে সূর্য লম্বভাবে এবং উত্তর গােলার্ধে কোণ করে কিরণ দিতে থাকে। এতে উত্তর গােলার্ধে দিন ছােট ও দক্ষিণ গােলার্ধে দিন বড় এবং রাত ছােট হতে থাকে। এর মধ্যে ২২ এ ডিসেম্বর সূর্য মকরক্রান্তির উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। সেই দিন উত্তর গােলার্ধে ছােট দিন ও বড় রাত হওয়াতে শীতকাল। ঐ দিনই সূর্যের দক্ষিণায়নের শেষ এবং তার পরের দিন থেকে পুনরায় সর্য উত্তর দিকে আসতে থাকে। ২২এ ডিসেম্বরের দেড় মাস পূর্বেই উত্তর গােলার্ধে শীতকাল শুরু হয় এবং পরের দেড় মাস পর্যন্ত বিরাজ করে।
বাংলাদেশে বসন্তকাল
পৃথিবী তার কক্ষপথে চলতে চলতে ২২এ ডিসেম্বরের পর থেকে ২১এ মার্চ পর্যন্তনএমন স্থানে ফিরে আসে যখন সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দিতে থাকে। ফলে ২১এ মার্চ পৃথিবীর সর্বত্র দিনরাত্রি সমান হয়। দিনের বেলায় সূর্যকিরণের কারণে ভূপৃষ্ঠের বায়ুস্তর গরম হয় এবং রাত্রিবেলায় বিকিরিত হয়ে ঠান্ডা হয়। এই সময় উত্তর গােলার্ধে (বাংলাদেশে) বসন্তকাল হয়।
প্রতিবেদকের নামঃ (নিজের নাম লিখবেন)
প্রতিবেদকের ঠিকানাঃ (নিজের ঠিকানা লিখবেন)।
প্রতিবেদনের সময়ঃ সকাল ১০ টা
তারিখ
২০২১ সালের এসএসসির অন্যান্য বিষয়ের উত্তর দেখুন এখান থেকে অথবা চোখ রাখুন আমাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে ।