৯ম শ্রেণির শারীরিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট নমুনা সমাধান ২০২১
নবম শ্রেণির সকল সপ্তাহের শারীরিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর । ৯ম শ্রেণির ১২তম সপ্তাহের শারীরিক শিক্ষা এসাইনমন্টে নমুনা সমাধান আমাদের ওয়েবসাইটে যুক্ত করা হয়েছে । উল্লেখ্য যে, শারীরিক শিক্ষা সকল বিভাগের (বিজ্ঞান , মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা) জন্য আবশ্যিক নির্ধারিত কাজ । সকল সপ্তাহের শারীরিক শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এখান থেকে দেখা যাবে ।
৯ম শ্রেণির শারীরিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট নমুনা সমাধান ২০২১
করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবকালীন সংকটময় পরিস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বাের্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণয়নকৃত ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সাপ্তাহিক এসাইনমেন্ট কার্যক্রম চালু করা হয় । প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন বিষয়ের উপর এসাইনমেন্ট প্রশ্ন প্রকাশ করা হয় এবং সপ্তাহ শেষে লিখিত এসাইনমেন্ট নিজ নিজ বিদ্যালয়ে জমা দিয়ে পরবর্তী সপ্তাহের এসাইনমেন্ট নিতে হয় । সূত্রমতে, চলমান এসাইনমেন্ট কার্যক্রম মোট ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে ।
নবম শ্রেণির ১২তম সপ্তাহের শারীরিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট প্রশ্ন ও উত্তর
শারীরিক শিক্ষা ১ম এসাইনমেন্ট প্রশ্ন মূল বইয়ের প্রথম অধ্যায়: সুস্থ জীবনের জন্য শারীরিক শিক্ষা থেকে নেওয়া হয়েছে ।
নির্ধারিত কাজ : “দেহ ও মনের সার্বিক উন্নতির লক্ষ্যে প্রয়ােজন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুষম উন্নয়ন, মানসিক বিকাশ সাধন সামাজিক গুণাবলি অর্জন ও খেলাধুলার মাধ্যমে চিত্ত বিনােদন”- উক্তিটি বিশ্লেষণ পূর্বক একটি প্রবন্ধ লিখ ।(সর্বোচ্চ ২০০ শব্দ)
নমুনা উত্তর
” দেহ ও মনের সার্বিক উন্নতির লক্ষ্যে প্রয়ােজন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুষম উন্নয়ন, মানসিক বিকাশ সাধন, সামাজিক গুণাবলী অর্জন ও খেলাধুলার মাধ্যমে চিত্তবিনােদন । “
শৈশব থেকে আমাদের দেহ ও মনকে সুস্থ রাখার জন্য যে শিষ্ক দেওয়া হয় তাকে শারীরিক | শিক্ষা বলা হয়। শারীরিক শিক্ষা বলতে খেলাধুলাে, যােগ ব্যায়াম, ওয়ার্কআউট, প্রাণায়াম এবং ধ্যানের মতাে ক্রিয়াকলাপকে। জীবনে যেমন প্রতিটি শিক্ষার গুরুত্ব রয়েছে ঠিক তেমনি রয়েছে শারীরিক শিক্ষার। শারীরিক শিক্ষা দেহ ফিট এবং সুস্থ রাখে। শৈশব কাল থেকেই এই শিক্ষার প্রয়ােজন রয়েছে।
শারীরিক শিক্ষার সংজ্ঞা
শারীরিক শিক্ষা হল শরীরচর্চা শিক্ষা অর্থাৎ শারীরিক অনুশীলন, খেলাধুলাে এবং স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে নিয়মিত নির্দেশ প্রক্রিয়াকে বােঝায়। শারীরিক শিক্ষা শব্দটি সাধারণত স্কুল ও কলেজ শিক্ষার সঙ্গে জড়িত। এই শিক্ষার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে তার স্বাস্থ্য, মন এবং সুস্থ শরীর সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সুস্থ শরীর এবং সুস্থ মন পেতে চাইলে একজন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি প্রত্যেকটি ব্যক্তির নিয়মিত শারীরিক শিক্ষা অনুশীলন করা উচিত।
শারীরিক শিক্ষা ও শিক্ষার সম্পর্ক সম্বন্ধে সি. এ. বুচার | (CA.Bucher) বলেছেনশারীরিক শিক্ষা, শিক্ষার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শারীরিক শিক্ষা হলাে সুনির্দিষ্ট শারীরিক কাজকর্মের মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক, আবেগিক এবং সামাজিক দিক দিয়ে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তােলার লক্ষ্যে পৌঁছানাের চেষ্টা। এ আলােচনা থেকে বােঝা যায় শিক্ষা ও শারীরিক শিক্ষা একে অপরের পরিপূরক।
চেন, ডি. কে. ম্যাথিউস বলেছেন, শারীরিক কার্যকলাপের দ্বারা অর্জিত শিক্ষাই শারীরিক শিক্ষা।
হস স্মিথ ও ক্লিফটন বলেছেন, বিজ্ঞানসম্মত ও কৌশলগত অঙ্গসঞ্চালনের নাম শারীরিক শিক্ষা।
জে. বি. ন্যাশের ভাষায়, শারীরিক শিক্ষা গােটা শিক্ষার এমন একদিক যা মাংসপেশির সঠিক সঞ্চালন ও এর প্রতিক্রিয়ার ফল হিসেবে ব্যক্তির দেহের ও স্বভাবের পরিবর্তন ও পরিবর্ধন সাধন
করে।
শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য
শারীরিক শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে ব্যক্তির সর্বাত্মক উন্নতি সাধন করা, সুস্থদেহে সুন্দর মন গড়া। শারীরিক শিক্ষার প্রধান কাজ হলাে শিশুকে আনন্দ ও খেলাধূলার মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করা ও কর্মক্ষম করে গড়ে তােলা। বিভিন্ন শারীরিক শিক্ষাবিদগণ শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে নিম্নলিখিত মত ব্যক্ত করেছেন।
উইলিয়ামস-এর মতে, শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য হলাে ব্যক্তির শারীরিক, সামাজিক ও অন্যান্য দিকের সুষম উন্নতি ঘটিয়ে ব্যক্তিসত্তার সর্বাঙ্গীণ বিকাশ সাধনের চেষ্টা করা”।
এম. জি. ম্যাসন ও এ. জি. এল ভেল্টার বলেছেন-
১. শিশুকে সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার জন্য তাকে সুস্থভাবে গড়ে তােলা।
২. শিশুর সৃজনশীল প্রতিভার উন্মেষ ঘটানাে।
৩. সামাজিক মূল্যবােধ সম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করা।
৪. নৈতিক, আবেগিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিক গুণাবলি অর্জনে অনুধণিত করা।
শারীরিক শিক্ষার উদ্দেশ্য
বিভিন্ন চিন্তাবিদদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে মতামত বিবেচনা করে শারীরিক শিক্ষার উদ্দেশ্যকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে
যথা
১. শারীরিক সুস্থতা অর্জন।
২. মানসিক বিকাশ সাধন।
৩. চারিত্রিক গুণাবলি অর্জন।
৪. সামাজিক গুণাবলি অর্জন।
- শারীরিক সুস্থতা অর্জন
ক. খেলাধুলার নিয়মকানুন মেনে ভালাে করে খেলতে পারা।
খ. কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হাসিল করা।
১. শারীরিক সুস্থতা অর্জন:
ক. খেলাধুলার নিয়মকানুন মেনে ভালাে করে খেলতে পারা।
খ. কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হাসিল করা।
গ. স্নায়ু ও মাংসপেশির সমন্বয় সাধনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
ঘ. দেহ ও মনের সুষম উন্নতি করা।
- মানসিক বিকাশ সাধন
ক. উপস্থিত চিন্তাধারার বিকাশ সাধন।
খ. নৈতিকতা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন।
গ. সেবা ও আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হওয়া।
ঘ. বিভিন্ন দলের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ ও প্রতিযােগিতামূলক মনােভাব গড়ে ওঠা।
- চারিত্রিক গুণাবলি অর্জন
ক. আনুগত্যবােধ ও নৈতিকতা বৃদ্ধি পাওয়া।
খ. খেলাধুলার মাধ্যমে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবােধ জাগ্রত হওয়া।
গ. খেলােয়াড় ও বন্ধুত্বসূলব মনােভাব গড়ে ওঠা।
ঘ. প্রতিদ্বন্ধীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মনােভাব গড়ে ওঠা।
- সামাজিক গুণাবলি অর্জন
ক. নেতৃত্বদানের সক্ষমতা অর্জন ও সামাজিক গুণাবলি অর্জন
করা।
খ. বিনােদনের সাথে অবসর সময় কাটানাের উপায় জানা।
গ. বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের যােগ্যতা অর্জন করা
ঘ.সকলের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা।
শারীরিক শিক্ষার কর্মসূচি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলাধুলা, ব্যায়াম, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ও বিনােদনমূলক যে সমস্ত কার্যকলাপ পরিলক্ষিত হয় তাকে শারীরিক শিক্ষার কর্মসূচি বলে। একজন শারীরিক শিক্ষক যে সমস্ত কার্য সম্পাদন করেন তাই এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত।
এ কর্মসূচিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়
১. অত্যাবশ্যকীয় কর্মসুচি (Compulsory Service Programme)
২. অন্তঃক্রীড়াসূচি (Intramural Sports)
৩. আন্তঃক্রীড়াসূচি (Extramural Sports)।
অত্যাবশ্যকীয় কর্মসূচী (Compulsory Service Programme): একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে সরকারী নির্দেশাবলী, শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক ক্লাস, প্রতিযােগিতা, সমাবেশ ও স্থানীয় নির্দেশনা ইত্যাদি সবই অত্যাবশ্যকীয় কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত।
এই কর্মসূচিগুলাে একজন শারীরিক শিক্ষকের অবশ্যই পালন করতে হয়। সরকারি নির্দেশনাবলী বলতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কৃর্তক জারিকৃত শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক যে সমস্ত | নির্দেশনা, যেমন- প্রাত্যহিক সমাবেশ করতে হবে, প্রতিদিন/সপ্তাহে ৩টি ক্লাস নিতে হবে, আন্তঃস্কুল ক্রীড়া প্রতিযােগিতায় অংশগ্রহণ করতে হবে। জাতীয় দিবসগুলােতে খেলাধুলা করাতে হবে . ইত্যাদিকে বুঝায়।
অন্তঃক্রীড়াসূচি (Intramural Sports): ইন্ট্রামুরাল একটি ল্যাটিন শব্দ Intra অর্থ ভিতরে এবং Muralis অর্থ দেয়াল। তাহলে পুরাে অর্থ দাড়ায় দেয়ালের ভেতরে অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের চারি দেয়ালের মধ্যে বা নিজেদের মধ্যে প্রতিযােগিতা আকারে যে সমস্ত খেলাধুলা হয় তাকে ইন্ট্রামুরাল স্পাের্টস বলা হয়। যেমন- বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযােগিতা,নবম শ্রেণী বনাম দশম শ্রেণী ক্রিকেট ম্যাচ, অথবা যষ্ঠ শ্রেণি ক ও খ শাখার মধ্যে প্রতিযােগিতা ইত্যাদি। যদি হাউজ থাকে তাহলে হাউজে হাউজে যে প্রতিযােগিতা হয় তাও এর আওতায় পড়ে।
আন্তঃক্রীড়াসূচি (Extramural Sports): Extra অর্থাৎ বাইরে, Muralis অর্থ দেয়াল অর্থাৎ দেয়ালের বাইরে যে সমস্ত খেলাধুলা হয় তাকে আন্তঃক্রীড়াসূচি।(Extramural Sports) বলা হয়। যে সমস্ত খেলাধুলা বা প্রতিযােগিতা এক স্কুলের সাথে অন্য স্কুল, এক কলেজের সাথে অন্য কলেজের মধ্যে খেলা হয় তাকে আন্তঃক্রীড়া প্রতিযােগিতা বলা হয়। যেমন- আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ, আন্তঃক্লাব ইত্যাদি প্রতিযােগিতা বুঝায়। এ সমস্ত প্রতিযােগিতার মাধ্যমে নিজ দলের যােগ্যতা যাচাই করা যায়। এ ধরনের প্রতিযােগিতায় বিভিন্নমানে খেলােয়াড়রা অংশগ্রহণ করে।
অন্যান্য বিষয়ের এসাইনমেন্ট সমাধান দেখুন এখান থেকে